দেশের স্বার্থে বৃহৎ দুই রাজনৈতিক শক্তিকে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে

লক্ষণীয় যে পৌর অঞ্চল বা সিটি কর্পোরেশন এলাকাতে জামায়াতের ভোট ব্যাংক ভালো থাকলেও ইউনিয়ন পর্যায়ে ঠিক তার বিপরীত।ঢাকা কিংবা চট্টগ্রাম সহ অন্যান্য মেট্রোপলিটন শহরগুলোতে কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলেই শুধুমাত্র জামায়াতের সংখ্যা গরীষ্ঠতা অর্জন করা সম্ভব,বাকি এলাকাগুলোতে তাদের উল্লেখযোগ্য নিবেদিত সমর্থক থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।সুতরাং কোন একক আসন জয় করা জামায়াতের জন্য অতটা সহজ কোন কাজ নয় বিশেষত সংখ্যাগরীষ্ঠ নির্বাচন পদ্ধতিতে সেটা বুঝতে তাদের বেশি সময় লাগেনি।

লিবারেল মাংকি
10 Min Read

সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত খবরের একটি হলো-দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ এবং মূলধারার রাজনীতিতে তাদের অংশগ্রহণ কল্পে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন।ব্যপারটা বাংলাদেশের সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ।

সম্ভবত আমাদের সবার মনে থাকার কথা যে সরকার পতনের পরপরই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এবং ভোটিং ব্যবস্থা নিয়ে হইচই হয়েছিলো এদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক এবং রাজনৈতিক মহলে।আনুপাতিক নির্বাচনের আলাপ জোরেশোরে শুরু করেছিলো তুলনামূলক ছোট রাজনৈতিক দলগুলো।তবে বিএনপির দ্বিমতের কারণে সেটা আর ফলপ্রসূ হয়নি।

আনুপাতিক নির্বাচন বিএনপির জন্য লাভজনক নয় সেটা বুঝতে খুব বেশি রাজনৈতিক দূরদর্শিতার প্রয়োজন নেই।বিশেষত আমাদের দেশে যেহেতু সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে আসনের জয় পরাজয় নির্ধারিত হয় তাই বিএনপি অবশ্যই আনুপাতিক পদ্ধতিতে সম্মতি জ্ঞাপন করে নিজেদের হিস্যার আসন হারাতে চাইবে না,বিশেষত যখন দেশের অপর বৃহৎ রাজনৈতিক দল সেইভাবে সক্রিয় নেই।নিত্যনতুন রাজনৈতিক দলগুলোর আবির্ভাবের গূঢ় রহস্য ও এই আনুপাতিক নির্বাচনে বিএনপির অনীহাতেই নিহিত।সংখ্যাগরিষ্ঠ নির্বাচন পদ্ধতিতে প্রতিপক্ষের তুলনায় এক ভোটে আগানো থাকলেও সেই আসনে জয়ী হওয়া যায়,তবে আনুপাতিক নির্বাচনে সেটা সম্ভব নয়।আনুপাতিক নির্বাচনে মোট প্রাপ্য ভোটের অনুপাতে আসন বরাদ্দ হয়।আর এতে করে লাভবান হয় মূলত ছোট খাটো রাজনৈতিক দলগুলো কিংবা যাদের ভোট ব্যাংক কোন সুনির্দিষ্ট ভৌগলিক অবস্থান অথবা গোষ্ঠী কেন্দ্রিক।উদাহরণ স্বরুপ বলা যায় জামায়াতের কথা।

জামায়াতের যেই সমর্থক গোষ্ঠী তাদের বেশিরভাগই শহুরে মধ্যবিত্ত গোত্রীয়।এদের শিক্ষা দীক্ষার বালাই ভালো,আর্থিক স্বচ্ছলতা বাকিদের তুলনায় বেশি।ইসলামের পুঁজিবাদী সংস্করণের ধারক হলেও ইনসাফ এবং ধর্মীয় বয়ানের বাগ্মীতায় এইদেশের অতিসংবেদনশীল শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর যেই ভোগবাদী মানসিকতা এবং অত্যাভিলাষী চাহিদা সেই জায়গাটা জামায়াত ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছে।বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,ব্যাংক-বীমা এবং শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে।টার্গেট গ্রুপ সেট করে তাদের শিক্ষা সহায়তা সহ চাকরি বা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছে।ফলে তাদের একটি অনুগত পাঁড় সমর্থক গোষ্ঠী গড়ে উঠেছে।তাই তাদের ভোট ব্যাংক মূলত শহর কেন্দ্রীক,প্রত্যন্ত অঞ্চলে তাদের এই টোটকা কাজে লাগেনি বা লাগলেও তা অতি নগণ্য।এর মূল কারণ হিসেবে এই দেশের আর্থসামাজিক কাঠামোকে বিবেচনা করা যেতে পারে।গ্রাম্য প্রান্তিক গোষ্ঠীর মাঝে উচ্চাভিলাষী আচরণ খুব একটা নেই,আকাঙ্ক্ষা ও আকাশচুম্বী না।তাদের কাছে উন্নত জীবন বলতে সীমিত আয়ে তিনবেলা পেটে মুখে দিয়ে বেঁচে থাকাই বুঝায়।এইজন্যে তারা সবসময় এমন কাউকে খুঁজে নিতে চায় যে তাদের জীবনমান উন্নয়নের চেয়ে রাজনৈতিক এবং ক্রয়ক্ষমতার স্থিতিশীলতায় বেশি গুরুত্ব দিবে।আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে এই গোষ্ঠী ধর্ম পালন করার পাশাপাশি তাদের পৌরাণিক সংস্কৃতিকেও অনেকখানি ধারণ করে।যেই জায়গায় কোন গোঁড়া মতাদর্শের নগ্ন হস্তক্ষেপ তারা কখনোই চাইবে না।তাই গ্রাম্য কিংবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে জামায়াতের সমর্থন শহুরে অঞ্চলের মত না।শহরে বিশেষত বিভাগীয় শহর গুলোতে ভোটার বেশি,আসন ও তুলনামূলক বেশি।তবে মোটের উপরে শহরের চাইতে বাইরেই আসন সংখ্যা ঢের বেশি।

আবার এটাও লক্ষণীয় যে পৌর অঞ্চল বা সিটি কর্পোরেশন এলাকাতে জামায়াতের ভোট ব্যাংক ভালো থাকলেও ইউনিয়ন পর্যায়ে ঠিক তার বিপরীত।ঢাকা কিংবা চট্টগ্রাম সহ অন্যান্য মেট্রোপলিটন শহরগুলোতে কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলেই শুধুমাত্র জামায়াতের সংখ্যা গরীষ্ঠতা অর্জন করা সম্ভব,বাকি এলাকাগুলোতে তাদের উল্লেখযোগ্য নিবেদিত সমর্থক থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।সুতরাং কোন একক আসন জয় করা জামায়াতের জন্য অতটা সহজ কোন কাজ নয় বিশেষত সংখ্যাগরীষ্ঠ নির্বাচন পদ্ধতিতে সেটা বুঝতে তাদের বেশি সময় লাগেনি।

এই সত্যকে সামনে রেখেই জামায়াত এবং তুলনামূলক খর্বশক্তির দলগুলো তাই উদ্যোগ নিয়েছে কয়েক স্তরের দলীয় কাঠামো গড়ে তোলার।এর প্রথম সোপান ছিলো নাগরিক কমিটি এবং গণ-অধিকার পরিষদ গঠন।জানাক বা গঅপ এর ঘোষিত কমিটিগুলোতে স্থান পেয়েছে মূলত জামায়াত সমর্থিত কিংবা সেই মতাদর্শে দীক্ষিত লোকজনেরাই।এটাকে জামায়াতের অবিমৃশ্যতার রাজনীতির নব্য সংস্করণই বলা যায়।এখন কথা আসতে পারে জানাক কিংবা গঅপ জামায়াত কে এই সুযোগ দিচ্ছে কেন বা দিবে কেন? উত্তরটা খুবই সহজ এবং প্রচ্ছন্ন।জানাক কিংবা গঅপ এর কর্তাব্যক্তি যারা, তারা সবাই ১৮ এর কোটা আন্দোলন এবং ২৪ এর কোটা আন্দোলন এর ঔরসজাত সন্তান বলাই যায়।তাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নাতিদীর্ঘ,রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় যদি এগিয়েও থাকে তারা জানে তাদের পক্ষে এই স্বল্প সময়ে এই রাজনৈতিক বলয় ভেদ করা সম্ভব নয়।আবার বিএনপি কিংবা প্রথাগত কোন রাজনৈতিক দলই তাদের মত এইরকম অতিপ্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে দীর্ঘ সময়ের জন্য সক্রিয় রাখতে চাইবে না।সুতরাং জামায়াতই ছিলো তাদের সামনে একমাত্র উত্তম বিকল্প।

এখানে জামায়াতের লাভটা হচ্ছে ভিন্ন জায়গায়।যেহেতু আনুপাতিক নির্বাচন না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি,তাই জানাক এর মত এইরকম যত রাজনৈতিক দলগুলোর জন্ম হবে তত বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির ভোট কাটা পড়বে।আর যেহেতু সংখ্যাগরীষ্টতার ভিত্তিতে নির্বাচন হবে এবং বিএনপির তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে এটা স্পষ্ট যে এক আসনে তাদের দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি ২/৩ জন বিদ্রোহী প্রার্থী থাকাও আশ্চর্যের কিছুই না,তাই একটি ভোটের মূল্য ও এখন আসলে অনেক অনেক বেশি।কারণ জামায়াত তাদের নিজস্ব ভোট ব্যাংকের বাইরে ভোট তেমন একটা পাবে না।বিএনপি কিংবা আওয়ামীলীগ নিজস্ব সমর্থকদের ভোটের পাশাপাশি নিরপেক্ষ গোষ্ঠী, যারা মূলত পরিস্থিতি বিবেচনায় ভোট দিয়ে থাকে তাদের ভোট ও পেয়ে থাকে।তাই বিএনপির তৃণমূলের নৈরাজ্য এবং বিশৃংঙ্খলা উদ্ভুত জনরোষ কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে জানাক সহ অন্যান্য দলগুলোকে বিএনপির বিকল্প হিসেবে দাঁড় করানোতেই মূলত জামায়াতের রাজনৈতিক সাফল্য তা একেবারে স্পষ্ট।ফলে এই সুইং ভোটগুলো কাটা পড়বে এবং আসন জয় করা বিএনপির পক্ষে কষ্টসাধ্য হবে।

তবে বর্তমান প্রজন্মের ইতিহাস ও রাজনীতি সচেতন একটি অংশ যে জামায়াতের ধর্মীয় লেবাসের রাজনীতির তীব্র বিরুদ্ধে এবং একাত্তরে তাদের ভূমিকার কঠোর সমালোচক তা বুঝতেও জামায়াত খুব বেশি সময় নিয়েছে বলা যায় না।আর সেইজন্যই মূলত এই সময়ে আবির্ভাব ঘটছে ছাত্র উপদেষ্টাদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলের।২৪ এর আন্দোলন পরবর্তী সময়ে যেই দেশপ্রেমিক ইমেজ এই সমন্বয়কেরা নিজেদের জন্য তৈরী করেছেন সেটাকে হাতিয়ার করেই মূলত তারা এই কাজটি সেরে নিতে চাইছেন।ছাত্র উপদেষ্টাদের দলের মাধ্যমে মূলত দেশের নতুন প্রজন্মের শিক্ষিত লিবারেল যেই অংশ সেই অংশের সমর্থন প্রথাগত রাজনৈতিক দলগুলো থেকে সরিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টাই লক্ষণীয়।এইজন্য তারা মুক্তিযুদ্ধের বুলি আওড়াচ্ছেন ঠিকই তবে সাথে সূক্ষ্ম ভাষায় জুড়ে দিচ্ছেন বাংলাদেশপন্থী,মধ্যপন্থি সহ নানান উপসর্গ যা মূলত এই তরুণ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করারই হাতিয়ার।কার্যত ছাত্র উপদেষ্টাদের নতুন দলের মাধ্যমে জামায়াত সহ ডানপন্থী দলগুলো দেশের তরুণ বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজের সমর্থন পেতে চাইবে।যেহেতু মুক্তিযুদ্ধে জামাতের বাংলাদেশ বিরোধীতা সন্ধ্যা আকাশের ধ্রুবতারার মত প্রকাশিত তাই তারা জানে এই সত্য কিংবা ন্যারেটিভ কে ধামাচাপা দিতে অথবা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভিন্ন বয়ান দাঁড় করাতে গেলেই তাদের বিতর্কিত হতে হবে,দূর্বল এবং অন্তঃসারশূন্য যুক্তিতর্কের জন্য জনগণের হাসির খোরাক হতে হবে।যেহেতু এই দেশের স্বাধীকার চেতনার ধারক গোষ্ঠীকে তারা নিজেদের পক্ষে আনতে পারছে না তাই বরং তাদের মাঝে দোদূল্যতা সৃষ্টি করাই শ্রেয়।আর সেইক্ষেত্রে সর্বোত্তম উপায় হতে পারে ছাত্র-উপদেষ্টাদের নতুন দল।যা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা অবশ্যই করবে না তবে মুক্তিযুদ্ধকে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে কাঙ্ক্ষিত সম্মান ও মর্যাদা ও দিবে না।এর কারণ হিসেবে বলা যায় দেশের রাজনৈতিক ময়দানের প্রধান দুই দলের রাজনৈতিক চালিকা শক্তি হলো মুক্তিযুদ্ধে সেই দলগুলোর অগ্রনায়ক দের অবদান।মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে এরশাদ বিরোধী আন্দোলন,১/১১ সহ নানা রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে যুগপৎ আন্দোলন ঘটলেও বিএনপি কিংবা লীগ সেইসব আন্দোলন কে স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে তুলনা করেনি,কারণ তাদের দরকার পড়েনি।কিন্তু বর্তমান সময়ে এসে ২৪ এর আন্দোলন কে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলা হচ্ছে এর মূল কারণ হলো আমাদের দেশের রাজনীতি হচ্ছে ন্যারেটিভ নির্ভর।লীগ এবং বিএনপির মুক্তিযুদ্ধের বয়ান থাকলেও জামায়াত এই ক্ষেত্রে শুধুমাত্র রিক্তহস্ত যে তা না,পাশাপাশি কঠিন ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ ও বটে।তাই বর্তমান প্রজন্ম কে কাছে পেতে তাদের ও একটা ন্যারেটিভের দরকার ছিলো যেটা ২৪ কে ৭১ এর মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে তারা চরিতার্থ করতে চাইছে।এতে ছাত্র-সমন্বয়কদের ঠিক ততটা বাঁধার সম্মুখীন তারা হচ্ছেন না কারণ ২৪ এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব যদি ৭১ এর সমপর্যায়ে এমনকি কাছাকাছি ও প্রতিষ্ঠা করা যায় তবে বাংলাদেশের রাজনীতির ময়দানে ছাত্র-সমন্বয়কদের ও আর কখনো অপাঙক্তেয় হতে হবে না।আবার যেহেতু সমন্বয়করা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে না গিয়ে বরং কূটনৈতিক কৌশল অবলম্বন করে আসছেন তাই তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী হিসেবে আখ্যা দিতেও প্রগতিশীল এবং প্রথাগত রাজনৈতিক দলগুলোর দুইবার ভাবতে হচ্ছে।

উপরোক্ত ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে কি বলা যেতে পারে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জামায়াতের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট?সেই সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে আমাদের প্রথমেই নজর দিতে হবে সংস্কারের ঢোলের প্রতি।রেডিও-টেলিভিশনে প্রতিনিয়ত সংস্কারের বাজনা বাজতে থাকলেও কার্যত দেশে চলছে চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা।চারদিকে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি,ছিনতাই-লুটপাট,চাঁদাবাজির ছড়াছড়ি আর বিনা অপরাধে কারান্তরীণ করার প্রতিযোগিতা।মজার ব্যপার হচ্ছে এই অশান্তির পরিবেশ যতদিন কায়েম রাখা যাবে ততদিনই আসলে তারা মূলত এই সংস্কারে বাঁশিতে বাংলার মানুষদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতে সক্ষম হবেন।ঠিক এই জায়গাতেই তারা জামায়াত সহ অন্যান্য ডানপন্থী দলগুলোকে কাজে লাগাচ্ছেন সুনিপুণ দক্ষতায়।তারা যেহেতু বিশৃঙ্খলা দীর্ঘায়িত করার মাধ্যমে পশ্চিমা প্রভুদের মনোরঞ্জন করে যেতে চান তাই বিভেদ সৃষ্টিতেই তাদের যাবতীয় মনযোগ।সেই কাজে তারা ব্যবহার করছে জামায়াত,জানাক,গঅপ সহ অন্যান্য ভূঁইফোঁড় রাজনৈতিক দলগুলোকে।রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার চেয়ে ফলপ্রসূ কোন বিশৃঙ্খলা যেহেতু এখন অব্দি আবিষ্কৃত হয়নি তাই এতেই তাদের বিশেষ মনযোগ।বিএনপির ছন্নছাড়া তৃণমূল এবং ভঙ্গুর দলীয় কাঠামোর কারণে মাঠ পর্যায়ে সরকারি মদদপুষ্ট এসব দলের বিরুদ্ধে কার্যকর কোন কর্মসূচী নেয়াও বেশ অসম্ভব ব্যপারই বলা যায়।

জামায়াতের এই দেশের জন্মের ইতিহাস,এই জাতির ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে দ্বিচারিতা এবং ঐতিহাসিক মোনাফেকি ও জামায়াতের সাথে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাত্রাতিরিক্ত সখ্য থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে পরিবর্তীত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই দেশের স্বার্থ রক্ষার্থেই দেশের বৃহৎ দুই রাজনৈতিক শক্তির একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়াই বাঞ্ছনীয়।অন্যথায় এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ফায়দা লুটবে স্বাধীনতা বিরোধী দেশীয় এবং বিদেশী লুটেরা গোষ্ঠী।

Share This Article
মবের মুল্লুকে আমি নিজ পরিচয়ে লিখতে ভীত-সন্ত্রস্ত। ক্ষমা করবেন আমায়।
error: Content is protected !!