কোটা আন্দোলনে স্নাইপার ঘাতক রহস্য! ঘাতকদের পরিচয় কি?

হায়দার আহমেদ
13 Min Read


সাম্প্রতিক সময়ে স্নাইপার রাইফেল উদ্ধার, ভাড়াটে খুনি গ্রেফতারের ঘটনা এবং আন্দোলনের সময় রহস্যজনক ভাবে গুলিবিদ্ধ হয়ে বেশ কয়েকটি মৃত্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, কোটা বিরোধী আন্দোলনে সব মৃত্যু কী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে হয়েছে না তৃতীয় কোনো গুপ্ত শক্তির হাতে ?

সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটার বিরোধীতা করে জুলাইয়ে বাংলাদেশে ব্যাপক ছাত্র আন্দোলন সংগঠিত হয়। একপর্যায়ে তা গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়। পুলিশ ও সরকারি দলের কর্মীদের সাথে সংঘর্ষের ফলে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। ৫ আগস্ট জনরোষে এবং সেনাবাহিনী কতৃক আন্দোলন দমনে অস্বীকৃতি জানালে পতন ঘটে দীর্ঘ ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের।এ আন্দোলনে কয়েক শতাধিক আন্দোলনকারী, পুলিশ, সরকারি দলের রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক এবং সাধারণ মানুষ নিহতের ঘটনা ঘটে৷ আন্দোলনকারীদের তরফ থেকে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যার অভিযোগ করা হয় পুলিশ এবং সরকার দলীয় রাজনৈতিক কর্মীদের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সরকার এবং তাদের দলের পক্ষ থেকে পুলিশের বাইরে স্নাইপার ব্যবহার করে গুপ্ত হত্যা চালিয়ে আন্দোলন দানা বেঁধে উঠতে তৃতীয় পক্ষের হাত থাকার অভিযোগ করা হয়েছে বারবার। এ বিষয়ে ‘ট্রু গেজেট’ বিস্তারিত অনুসন্ধান করে সত্য উন্মোচন করার চেষ্টা করছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার শাখাওয়াত এম সাখাওয়াত হোসেন আন্দোলনে আহতদের হাসপাতালে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন,

” আন্দোলনকারীদের উপর গুলিতে ৭.৬২ বুলেট ব্যবহার করা হয়েছিলো। পুলিশের গুলিতে কম মৃত্য হয়েছে, সিভিলিয়ান ব্যক্তিদের গুলিতে বেশি হতাহত হয়েছে। এ নিয়ে বড় ধরনের তদন্ত করা উচিত।”

আহত একজনের হাতে লাগা বুলেট দেখে এ মন্তব্য করেন তিনি।তার এ বক্তব্যের পর আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে তার পদত্যাগ দাবি করে মিছিল করা হয়। পরবর্তীতে মি.সাখাওয়াত দাবি করেন তার বক্তব্যকে ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কিন্তু এতেও বিশেষ লাভ হয়নি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদ থেকে তাকে সরিয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে এ সক্রান্ত বক্তব্যটি সকল ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়া থেকে মুছে ফেলা হয়। ভিডিওটি দেখুনঃ https://www.facebook.com/share/v/19kY2PA4w6/

এ আই দিয়ে আঁকা ভিজুয়াল


শুরুতেই নিজ বাসার ৬ তলার বারান্দায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত সুমাইয়া আক্তারের মৃত্যুর ঘটনা আলোকপাত করা যাক। ২০ জুলাই বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বাসার বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় গুলিতে নিহত হন সদ্য মা হওয়া সুমাইয়া আক্তার। তার বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ থানায়।

ছিদ্র হওয়া পাইপের ছবি
ছিদ্র হওয়া পাইপের ছবি

সুমাইয়া যখন বারান্দায় দাড়ান তখন ওই এলাকার আকাশে পুলিশের হেলিকপ্টার উড়ছিলো। আশেপাশের বাসিন্দারা হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা হয়েছে দাবি করলেও খটকা লাগে বারান্দার গ্রিলের পাইপ ভেদ করে আসা গুলির ছিদ্র দেখে৷ গুলি পাইপটি সমান্তরাল ছিদ্র করে সুমাইয়ার শরীরে ভেদ করে। কিন্তু ৬ তলা বারান্দার উচ্চতা এবং হেলিকপ্টার নূন্যতম যে উচ্চতায় উড়ে সে হিসেবে গুলি সমান্তরাল আসার কথা না, আড়াআড়ি বা খাড়া হয়ে পাইপে লাগার কথা বুলেট। কারণ ওই এলাকাটি ঘনবসতি এবং ন্যূনতম ১০ তলা থেকে ১৫-২০ তলা অব্দি বিল্ডিং সেখানে রয়েছে। তাই এতো নিচ দিয়ে হেলিকপ্টার উড়া এবং গুলি সমান্তরাল লাগার কথা নয় বলে মনে করছেন কেউ কেউ। এ বিষয়ে অনেকেই লেখালেখি করেছেন। গুলি যেভাবে পাইপ ছিদ্র করেছে তা দেখে মনে হচ্ছে সমান উচ্চতার কোনো বিল্ডিং থেকে গুলিটি ছোঁড়া হয়েছে। সন্দেহের তীর গুপ্ত স্নাইপারের দিকে। কিন্তু এ ঘটনার তদন্ত বা কোনো আইনী ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি। সুমাইয়ার স্বামী গ্রামে নিয়ে স্ত্রীর লাশ দাফন করে আসেন। সুত্রঃ টি বি এস

নিহত সুমাইয়া

বিস্তারিত এ আই জেনারেটেড ছবিতে


শিশু রিয়া গোপের মৃত্যুঃ  
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ সদরের নয়ামাটি এলাকায় ১৯ জুলাই বিকেলে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়। সে সময় পরিবারের সবার সঙ্গে বাসার ছাদে গিয়েছিল ছয় বছরের ছোট্ট মেয়ে রিয়া গোপ। হঠাৎ গুলি এসে লাগে প্রথম শ্রেণির এই শিক্ষার্থীর শরীরে। ছাদে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা হয়েছে এমন গুজব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও পরে জানা যায়, তখন ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো হেলিকপ্টার উড়তে দেখেননি কেউ। সংঘর্ষ হচ্ছিল নিচে রাস্তায়। বাসার ছাদে কীভাবে রিয়া গুলিবিদ্ধ হলেন এটাই অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। তাহলে পুলিশের গুলি নাকি তৃতীয় পক্ষের গুলিতে রিয়ার প্রাণ যায় সেটার সঠিক তদন্ত হলে বের হয়তো সত্য উন্মোচিত হতো। সূত্রঃ ডেইলি স্টার

হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোঁড়া হয়নি: র্যাব
হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোঁড়া হয়নি দাবি র্যাবের৷ গত ২ অক্টোবর ইউনূস সরকারের নিয়োগ দেয়া র্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌসকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে র‌্যাবের হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোড়া হয়েছিল কিনা- এক সংবাদ কর্মীর এই প্রশ্নে তিনি বলেন

“র‌্যাবের সদস্যরা ছাত্র-জনতার ওপর কোনো গুলি চালায়নি। আপনারা দেখবেন অনেক বাহিনী ও সংস্থার অনেক সদস্য পালিয়ে গেলেও, র্যাবের কেউ কোথাও পালায়নি।হেলিকপ্টার থেকে কেবল টিয়ারগ্যাস ছোড়া হয়েছে। হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোড়া হয়েছে এ রকম কোনো ভিডিও নেই। আপনাদের কারও কাছে যদি গুলি করার কোনো ভিডিও থাকে, আপনারা সেগুলো দিলে র্যাব তা যাচাই করবে।”

সূত্রঃ বিডি নিউজ ২৪


আন্দোলনে মৃত্যুবরণ করা সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়, মীর মুগ্ধ এবং রিয়াদ নামের তিনজনকে নিয়ে বিবিসি প্রতিবেদন করে। সেখানে দাবি করা হয় মাথায় গুলি লেগে তাদের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু পুলিশ ছিলো আন্দোলন কারীদের থেকে বেশ দূরে। পুলিশই তাদের গুলি করেছে এমন কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি। মূল খবরঃ বিবিসি

চবি শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার মৃত্যু এবং প্রত্যক্ষদর্শী ও তার বন্ধু নিঝুমের বক্তব্য:
পুলিশের গুলিতে নয়, আন্দোলনের ভেতরে ঢুকে পড়া দুর্বৃত্তদের গুলিতে ‍মারা গিয়ে থাকতে পারে তার বন্ধু হৃদয়। ফেসবুকে নিজেকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সিরাজুল ইসলাম নিঝুম।

১৮ জুলাই চট্টগ্রামে আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হৃদয় চন্দ্র তারুয়া। তার সঙ্গে থাকা বন্ধু সিরাজুল ইসলাম নিঝুম ফেসবুকে দেওয়া ভিডিও পোস্টে বলেন, ‘হৃদয়কে পুলিশ গুলি করেনি। ভিড়ের মধ্যে কেউ তাকে গুলি করেছিল।’ নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর নিঝুম তাকে রিকশায় করে পাশের পার্কভিউ হাসপাতালে নিয়ে যান। নিঝুম দাবি করেছেন, কোটা সংস্কারের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিতে তিনি ও হৃদয়সহ কয়েকজন বন্ধু বহদ্দারহাট এলাকায় ১৮ জুলাই দুপুর দেড়টার দিকে যান।

নিহত হৃদয় চন্দ্র তারুয়া

সেদিন শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকে। এসময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করলে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ পেছনে সরে যায়।
‘হৃদয় চট্টগ্রামের স্থানীয় না হওয়ায় এলাকা খুব ভালো করে চেনেন না’ উল্লেখ করে নিঝুম বলেন, ‘বহদ্দারহাট চার রাস্তার মোড়ে পুলিশ ও বিজিবি অবস্থান নিয়েছিল। বাম পাশের রাস্তার একটা অংশ থেকে ঢিল ছুড়ছিল। শিক্ষার্থীদের একটা অংশ যেখানে আমরা ছিলাম, পুলিশ কিছুক্ষণ পরপর গুলি করছিল। এসময় ভিড়ের মধ্যে অনেকের উপস্থিতি সন্দেহজনক বলে তার আর হৃদয়ের মধ্যে কথা হয় জানিয়ে নিঝুম দাবি করেন,

‘‘আমরা যারা সাধারণ শিক্ষার্থী আমাদের সঙ্গে ব্যাগ ছিল। আমরা ধাওয়া খেয়ে পিছু হটছিলাম। কিন্তু ওরা (সন্দেহভাজন) ভয় পাচ্ছিল না। তারা ভীষণ ‘অ্যাগ্রেসিভ’। আমার সন্দেহ হয়। এই মানুষগুলোর উপস্থিতি অন্যদেরও পুলিশের ওপর হামলা করতে উসকানি দিচ্ছিল।’’

বন্ধু হৃদয় পুলিশের গুলিতে মারা যায়নি দাবি করার কারণ হিসেবে সিরাজুল ইসলাম নিঝুম বলেন, ‘পুলিশ মেটাল বুলেট ছোড়েনি, রাবার বুলেট ছুড়ছিল। আর ধাওয়া খেয়ে আমরা তখন দেড় থেকে ২০০ মিটার দূরে চলে যাই। আমাদের ক্রাউডের মাঝখানে হঠাৎ বিকট আওয়াজ হয়। দুই-তিন সেকেন্ড পরে দেখি হৃদয় পড়ে আছে, হাত দিয়ে ডাকছে। আমি তখন তার দিকে তাকাতেও পারছিলাম না। প্রথমবার গুলিবিদ্ধ মানুষ দেখলাম। অনেককে সাহায্যের জন্য ডাকি। পরে অল্প বয়সী কয়েকজন ছেলের সহায়তায় হাসপাতালে নিয়ে যাই।’

নিঝুমের মতে, হৃদয় চন্দ্র তারুয়া এবং পুলিশের মাঝে প্রায় দেড়শ’ লোক ছিল এবং তার মধ্যে পুলিশের ছোড়া বুলেট হৃদয়কে আঘাত করবে— এমন সম্ভাবনা খুবই কম। তিনি আরও যুক্তি দেন যে তিনি যে গুলির শব্দ শুনেছিলেন, তা বেশ জোরে ছিল এবং অন্তত দেড়শ মিটার দূরে থাকা পুলিশের কাছ থেকে সেটা আসেনি। সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন

ছাত্র আন্দোলনে গুলি চালানোর অভিযোগে চট্টগ্রামে তৌহিদ নামে একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর সে সাংবাদিকদের জানায়, পাকিস্তান থেকে আমদানি করা অস্ত্র দিয়ে সে শিক্ষার্থীদের উপর গুলি চালায়। এ কাজের জন্য একজন যুবদল নেতা তাকে ৫ হাজার টাকা প্রদান করে। রহস্যজনকভাবে এ সংবাদটিও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ইউটিউবে দেখুন মূল ভিডিওঃ https://youtu.be/xeCKIJehoKo?si=anD7hNCI7koiqB9W

স্নাইপার রাইফেল এবং গুলি উদ্ধার:
আন্দোলনে স্নাইপার ব্যবহার করে গুপ্ত হত্যার যে দাবি উঠেছে তা আরো জোরালো হয়েছে ৫ ই আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বেশ কিছু ঘটনায়। সরকার পতনের পর পুলিশ ব্যবস্থা যখন ভেঙ্গে পড়ে তখন ছাত্ররা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করে। সেসময় তারা ঢাকায় একটি গাড়ি তল্লাশি করে স্নাইপার রাইফেল উদ্ধার করে৷ রহস্যজনকভাবে এ সংস্ক্রান্ত সংবাদগুলো মুছে ফেলা হয়েছে। তবে ফেসবুকে, ইউটিউবে কিছু ভিডিও পাওয়া গেছে। ভিডিওঃ https://youtu.be/17zjBXwJs_k?si=GJc83qy8I2TbbqnT

সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত অস্ত্র

পুলিশ এবং বিজিবির অভিযানে উদ্ধার হয় স্নাইপার রাইফেল এবং গুলি। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে নাজমুল বাহিনীর তিন সশস্ত্র সন্ত্রাসীকে লংরেঞ্জ (স্নাইপার) রাইফেলসহ গত শুক্রবার আটক করেছে বিজিবি। তারা হলেন, নাজমুল বাহিনীর তিন সদস্য বড়ছড়া গ্রামের রাজু আহমেদ (২১) জালাল মিয়া (২৩) ও রাসেল মিয়া (২৫)। বিজিবির সিলেট সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বড়ছড়া এলাকায় মেসার্স শামীশ ট্রেডার্সের একটি পরিত্যক্ত কয়লা ও চুনাপাথর ডিপো অফিসে অভিযান চালিয়ে একটি ভারতীয় লংরেঞ্জ শুটিং রাইফেল উদ্ধার করা হয়। তবে এই অস্ত্রটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কি না—সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। একটি সূত্র বলছে, এটা ভারত থেকে সন্ত্রাসীরা এনেছে।গত ২৯ সেপ্টেম্বর নড়াইলে সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে গতকাল স্নাইপার স্কোপযুক্ত একটি রাইফেল ও বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে। এ ঘটনায় চার জনকে আটক করা হয়। সূত্রঃ ইত্তেফাক

এছাড়া মাগুরায় ১০০ রাউন্ড গুলি ও একটি স্নাইপার বাইনোকুলার উদ্ধার করেছে যৌথবাহিনীর সদস্যরা। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে পাঁচজনকে।  সূত্রঃ আই টি ভি

আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষের ভাড়াটে খুনি ব্যবহার এবং আন্দোলন ধ্বংসাত্মক রূপ দিতে বিদেশি শক্তির হাত থাকার কথাও বলেন অনেকে। এ বিষয়ে বিশিষ্ট ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষক সিরাজুল হোসেন তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি বিশ্লেষণধর্মী লেখা শেয়ার করেন। সেখানে বাংলাদেশের জুলাইয়ে সংগঠিত ছাত্র আন্দোলনের হতাহতের ঘটনার সাথে ২০১৪ সালে ইউক্রেনে হওয়া সরকার বিরোধী আন্দোলনের সাদৃশ্য দেখিয়েছেন। সেখানেও তৃতীয় পক্ষের গুলির কারণে আন্দোলনকারী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে৷ যা পরবর্তীতে আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র যোগসাজশে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে।

মি.সিরাজুল হোসেন এর ফেসবুক পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো:

১০ বছর আগে ইউক্রেনে ছাত্র ও পুলিশ হত্যার মাধ্যমে স্নাইপার বিপ্লব করে রাশিয়াপন্থী সরকারকে যখন বিতাড়ণ করে আমেরিকা ও পশ্চিমা শক্তি, সেই সময় ৫ সপ্তাহে তিনবার ইউক্রেন ভ্রমণ করে তখনকার ইউরপিয়ান এলাকার জন্য আমেরিকার অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি ফর স্টেটস, ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড। আজ মার্কিন প্রতিনিধি দল ডোনাল্ড লু’রা আমাদেরকে যা বলেছে, সেই একই মুখস্ত কথাবার্তা বলেছিল ইউক্রেনের জনগণের সেই বিজয়কে স্বাগত জানিয়ে। যেটা বলেনি সেটা হল ওই স্নাইপারদের তারাই পাঠিয়েছিল, এর ফলেই ঐ ম্যসাকার হয়েছে এবং ফলস্বরূপ ১০ বছরে ইউক্রেন ধ্বংস হবে। পশ্চিমা এই প্রতারনা ও ভণ্ডামি তুলে ধরেই মার্কিন ফিল্ম মেকার জন বেক হফম্যান “ময়দান ম্যাসাকার” নামে এই অসাধারণ তথ্যচিত্রটি তৈরি করেছেন যেখানে স্নাইপার শটের বিষয়টি নিয়ে একটি চমৎকার তদন্ত ও বিশ্লেষণ আছে বিশেষ করে ইউক্রেনের পুলিশ বাহিনীর দৃষ্টিকোন থেকে তাদের উপর যে অন্যায় করা হয়েছে সেটা তুলে ধরে। পুরো তথচিত্রটির লিংক: (https://www.youtube.com/watch?v=Ary_l4vn5ZA&rco=1)

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নেয়া স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য, স্নাইপার রাইফেল উদ্ধার, ভাড়াটে খুনি ব্যবহার এবং হত্যার ধরণ থেকে এটি স্পষ্ট হয় যে আন্দোলনে শুধুমাত্র পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতেই নয় বরং তৃতীয় পক্ষের গুলিতেও বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রহস্যজনকভাবে এ বিষয়টি নিয়ে কাউকে কথা বলতে বা সংবাদ প্রকাশ করতে দেয়া হচ্ছে না। যেসব সংবাদ প্রচারিত হয়েছে তাও মুছে ফেলা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কারা সংবাদ মুছে ফেলে এসব ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে, বর্তমান সরকার নাকি ডিপ স্টেট বা ভিন্ন কোনো দেশের গোয়েন্দা সংস্থা!

অন্যদিকে ক্ষমতাচ্যূত আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও বারবার আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষের দ্বারা মানুষ হত্যার অভিযোগ তুলে সুষ্ঠু তদন্তের আহবান জানানো হয়েছে। এছাড়া দেশের সচেতন, সুশীল সমাজের পক্ষ থেকেও প্রত্যেকটি মৃত্যুর যথাযথ তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার তাগিদ রয়েছে।

Share This Article
সংবাদকর্মী
error: Content is protected !!