রাজনীতিমুক্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু, বিপাকে শত শত শিক্ষার্থী।

এমন আরো শত শত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রয়েছে। অনেকেই ভয়ে নিজেদের কথা বলতে চাচ্ছেনা। আমরা তাদের তথ্য গোপন রাখারা নিশ্চয়তা দেওয়ার পরেও উনারা বলেছেন,এমন পরিস্থিতি পরিবার আছেন শঙ্কায়, একাডেমিক জীবন প্রায় অনিশ্চিত, নতুন সাক্ষাৎকার দিয়ে আরো ঝুঁকি বাড়াতে চান না।

EditorTruegazette
3 Min Read
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কর্মীদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

গত ৫ আগস্ট আওয়ামিলীগ সরকারের পতনের পরেই বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতাকর্মীরা পড়েছে মারাত্নক বিপাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আওয়ামিলীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন, “ বাংলাদেশ ছাত্রলীগে ” এর প্রায় চার লক্ষ নেতাকর্মী আছেন চরম একাডেমিক বিপাকে।

ছাত্রলীগের কর্মী, সমর্থক এবং যারা সময়ের বিবেচনায় জুলাই আন্দোলনের সময় নিজেদের মতামত সোশ্যাল মিডিয়াতে জানিয়েছিলো সকলের শিক্ষাজীবন রয়েছে অনিশ্চয়তায়। তাদের অনেকে ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ যেমন করতে পারছে না,তেমনি নিজের বাসায় অবস্থান করতে পারছেনা।

বিভিন্ন স্কুল, কলেজ এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেহেতু রাজনীতির চর্চা আছে সেক্ষেত্রে কিছুটা বিপাক অনুমেয় ছিলো তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এমন চিত্র এবারই প্রথম।

সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, নর্দান ইউনিভার্সিটিসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে আমরা যোগাযোগ করেছি। তাদের কথায় উঠে আছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের একাডেমীক ও ব্যাক্তিজীবনে দুর্দশার গল্প।

সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী আমাদের জানায়,

তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন, জুলাই আন্দোলনের সময় তার মাঠে কোন ভূমিকাই ছিলো না তবে ফেসবুকে অল্পকিছু লেখালেখি করেছেন। এর জের ধরে উনাকে নানা অপরিচিত নম্বর থেকে কল মেসেজ দিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোন ধরনের নিষেধাজ্ঞা বা কোন কিছুর সম্মুখীন হতে হয়নি। উনি আরো জানিয়েছেন উনার মতো আরো অনেকেই এমন একাডেমিক অনিশ্চয়তায় জীবন পার করছেন।

নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় একজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন,

আওয়ামিলীগ সরকার পতনের পর থেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

দেশের অন্য আরেক স্বনামধন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ড্যাফোডিলের কয়েক শিক্ষার্থীর সাথে আমরা যোগাযোগ করেছি যারা বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলো এবং বিভিন্ন মাধ্যমে লেখালেখি করেছন।

তাদের মধ্যে একজন নানা অপরিচিত নাম্বার থেকে নানা সময়ে কল, মেসেজ দিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে তিনি আরো জানান জানান ৫ আগস্ট পূর্ববর্তী সময়ে প্রশাসন বলেছিলেন উনারা সবকিছু দেখবেন। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে উল্টো প্রশাসন বলা হয় যে উনারা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় তাই উনারা পরামর্শ দেন যেন একটা সেমিস্টার ড্রপ দেওয়া হয়। তবে করতে চাইলে নিজের জিম্মায় করতে হবে। এই বিষয়ে আমরা একাধিকবার প্রক্টরের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলেও উনার নাম্বারে সংযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এমন আরো শত শত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রয়েছে। অনেকেই ভয়ে নিজেদের কথা বলতে চাচ্ছেনা। আমরা তাদের তথ্য গোপন রাখারা নিশ্চয়তা দেওয়ার পরেও উনারা বলেছেন,

এমন পরিস্থিতি পরিবার আছেন শঙ্কায়, একাডেমিক জীবন প্রায় অনিশ্চিত, নতুন সাক্ষাৎকার দিয়ে আরো ঝুঁকি বাড়াতে চান না।

গত ১৬ বছরের আওয়ামী শাসন আমলের শাসন আমলের নানা ভালো দিক এবং খারাপ দিক থাকলেও শিক্ষা ব্যবস্থায় কোন শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন এমন ঝুঁকির মুখে পড়ছে বলে জানা নেই। দল মত নির্বিশেষে সকলে ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নিত।আগে যত সরকারই ছিলো তাদের প্রতিপক্ষ আর যাইহোক অন্তত পরীক্ষা লয় বসার সুযোগ পেয়েছে কিন্তু এবার ইউনুস নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময় ছাত্রসংগঠনের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিয়তার এক নজির রয়ে যাচ্ছে।

আগামী দিনে যারা ছাত্ররাজনীতি করবে তাদের জন্য এটা বেশ শঙ্কারও বটে।

turegazette.news
Share This Article
error: Content is protected !!