ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বর্তমান এবং সাবেক নেতা ,এমনকি কর্মীদের উপর নির্মম স্টিমরোলার চালাচ্ছে ইউনুস সরকার। একদিকে ছাত্রলীগের কর্মীদের হলে থাকতে দেওয়া হচ্ছেনা,অন্যদিকে ক্লাস পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আসলে মারধর করে পুলিশের হাতে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে কোন মামলা ছাড়াই। কেউ মাকে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন,সেখান থেকে পুলিশ বা ডিবি ধরে নিয়ে যাচ্ছে,কেউ বিয়ের বাজার করতে পরিবারের সাথে শপিংমল থেকে গ্রেফতার হচ্ছেন।
সম্প্রতি এক টকশোতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের বরাত দিয়ে জানা যায়
” শুধুমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থীকে কোন ক্লাস পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হচ্ছেনা রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে।”
ট্রু গেজেট প্রকৃত তথ্য অনুসন্ধান করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সরোজমিনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে যায় এবং সত্যতা পায় সাদ্দাম হোসেনের দাবির। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রায় সবাই ক্লাস পরিক্ষার অধিকার থেকে এখন বঞ্চিত ,ছাত্রলীগের সাথে নুন্যতম যোগাযোগ থাকলে তাদের হল ছাড়া করা হচ্ছে । ট্রু গেজেটের হাতে সমন্বয়কদের নির্দেশনার গোপন স্ক্রিনশট হাতে এসেছে। তবে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী ক্লাস পরীক্ষা দিচ্ছেন যাদের সমন্বয়ক এবং শিবিরের নেতাকর্মীদের সাথে ভালো সম্পর্ক রয়েছে অথবা ছাত্রলীগ বিরোধী আনলাইন এক্টীভিজম করছেন।মূলত হল্ভিত্তিক শিবির এবং সমন্বয়করা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হেনস্থা করছেন একাধিক শিক্ষার্থী আমাদের জানিয়েছেন।
ট্রু গেজেটের অনুসন্ধানে এখন পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ জন সাবেক বর্তমান ছাত্রলীগের নেতাকর্মী গ্রেফতার হওয়ার তথ্য এসেছে। আমরা গ্রেফতারকৃতদের চেনা- পরিচিতদের সাথে কথা বলে তাদের গ্রেফতার হওয়ার বিস্তারিত তথ্য জানতে পারি।

তারা হলেন…
১। মৃধা মোহাম্মদ আকাশ উজ্জামান হাসিব,
বঙ্গবন্ধু হল, ২০১৮-১৯ সেশন।
গ্রেফতার খুলনা নিজ বাড়ি থেকে। বিএনপি-ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা তারা বাড়িতে হামলা করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
২। রাকিব মুন্সি,
সূর্যসেন হল,
২০১৬-১৭ সেশন
স্বাস্থ্য অর্থনীতি।
খুলনায় তার বাড়িতে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের নেতৃত্বে হামলা করে স্থানীয় সমন্বয়করা। সেখান থেকে তাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে গ্রেফতার দেখানো হয়। সে গ্রেফতার এর আগে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয় ‘ এরেস্ট”
৩) শিহাব উদ্দিন তৈমুর
উপ-দপ্তর সম্পাদক,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ
বিভাগ: নৃবিজ্ঞান সেশন: ২০২০-২১
গত ২৩ অক্টোবর ২০২৪, নিরাপত্তাহীনতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তৈমুরের পরীক্ষা নেয় লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে। কিন্তু সেখানে শিবির, ছাত্রদল এবং সমন্বয়ক সন্ত্রাসী আক্রমণ করে তৈমুরকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। বর্তমানে সে কারাগারে রয়েছে। পরীক্ষা দিতে পারেনি আর।
৪) আবুল হাসান সাঈদী
সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক, ঢাবি ছাত্রলীগ।
বিজয় একাত্তর হল।
ফিন্যান্স বিভাগ।
নিরাপত্তা শঙ্কায় লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে স্থাপিত কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে ছাত্রদল, শিবির এবং সমন্বয়কদের যৌথ হামলার শিকার হয়। যদিও সরকার পতনের পর সে নিজেকে শিবিরের সাথী এবং ছাত্রলীগে এজেন্ট হিসেবে থাকার কথা বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তাকে প্রক্টরিয়াল বডির মাধ্যমে শাহবাগ থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়। বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।
৫) তানভীর হাসান শান্ত
ছাত্রবৃত্তি উপ সম্পাদক, ঢাবি ছাত্রলীগ।
স্যার এ এফ রহমান হল।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ।
২০২২ সালের একটি ঘটনায় ছাত্রদলের করা মামলায় ডিবি পুলিশ কতৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছে। তানভীর হাসান শান্ত কোটা বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছিলো। পরবর্তীতে তার শিবিরের সাথে সখ্যতা দেখা যায়। কিন্তু এতোকিছুর পরও গ্রেফতার ঠেকাতে পারেনি। তার ছোট ভাই ‘সীমান্ত’ নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক।
৬) জাহিদুল হক শুভ
উপ ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল
সেশন: ২০১৯-২০
সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ।
শুভ কে ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় তার মামা বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। থানায় সাংবাদিকদের সে নিজেকে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং গোপনে নূরুল হক নূরের গণঅধিকার পরিষদের সদস্য দাবি করে। গ্রেফতার হওয়ার পর শিবির নেতাদের ফোন দিয়ে ও নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি ।
৭। মোঃ মাহবুবুল আলম
বিভাগ: ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি
সেশন: ২০১৫-১৬
হল: মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল
উপ-অর্থ সম্পাদক,
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
মাহবুবের গ্রেফতার একটি ট্র্যাজিক ঘটনা। তার বড় ভাই ঢাকায় ব্যবসা করেন। তাকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। তাই ভাইকে হুমকি দিয়ে মাহবুবকে আত্মসমর্পণ করতে ব্ল্যাকমেইল করা হয়। একপর্যায়ে বড় ভাই কে বাঁচাতে ডিবি কার্যালয়ে ছুটে আসেন মাহবুব এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ধরনের ঘটনা মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অন্যতম বাঁধা।
8) মোঃ ওয়াজি উল্লাহ নাসিম
সদস্য, মহসিন হল ছাত্রলীগ, ঢাবি
লোক প্রশাসন বিভাগ
২০২০-২১ সেশন।
শ্রেনী কার্যক্রমে অংশ নিতে আসলে, ছাত্র শিবির ক্যাডার শাহজামাল সায়েম সহ কয়েকজন তাকে ধরে এবং মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরবর্তীতে ১৫ জুলাই ঢাবিতে হামলার ঘটনায় করা মামলায় তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
৯) ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত
সহ সভাপতি , বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
সাবেক শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ, ঢাবি।
ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত সদ্য আইন বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে হাইকোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করেন। কিন্তু ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর, মিরপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার নামে কোনো মামলা না থাকলেও মিরপুরের এক হত্যা মামলায় তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
১০) মোয়াজ্জেম এইচ রাকিব,
সাংগঠনিক সম্পাদক, সূর্যসেন হল ছাত্রলীগ, ঢাবি।
রাকিবকে ডিবি ডিএমপি গ্রেফতার করে। কোটা বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছিলো রাকিব। কিন্তু সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হওয়ায় তাকে কোনো মামলা ছাড়াই গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
১১) ইমন খান জীবন
ছাত্রলীগ নেতা, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, ঢাবি।

ইমনকে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে ডিবি ডিএমপি। পরবর্তীতে ঢাবিতে ১৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের উপর হামলার অভিযোগে সমন্বয়ক মাহিন সরকারের করা মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
১২) খাদিজা আক্তার উর্মী,
সভাপতি, শামসুন নাহার হল ছাত্রলীগ,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
কোটা আন্দোলনের পূর্বে দূর্ঘটনায় পা ভেঙে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলো উর্মী। আন্দোলন চলাকালে ঢাবিতে ছাত্রলীগের কোনো কর্মসূচিতে অংশ না নিলেও ডিবি ডিএমপি তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে।
১৩) তৌফিকুর রহমান আকাশ
সেশন ১৬-১৭
বঙ্গবন্ধু হল।
মামলা, হামলার ভয়ে জীবন বাঁচাতে সৌদি আরব যাওয়ার চেষ্টা করলে বিমানবন্দর থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে কারাগারে । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন ” তার এক আত্মীয় আকাশকে ধরিয়ে দেয়’
১৪) ইনজামামুল হক আলভী (আলভী খান)
বিভাগ: ইকোনমিক্স
সেশন: ২০১৮-১৯
হল: জসিমউদদীন
আন্তর্জাতিক সম্পাদক, ঢাবি ছাত্রলীগ
টাঙ্গাইল থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। আলভী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কুইজ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
১৫. আজহারুল হক ফরাজি
উপ সাহিত্য সম্পাদক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
ডিবি ডিএমপি গ্রেফতার করে হত্যা মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে।
১৬. শেখ সাদাত রহমান রাতুল, সাংগঠনিক সম্পাদক,শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগ।
দীর্ঘ দুই বছর হলে অনিয়মিত থাকেলে রহস্যজনক কারণে রাতুলকে গ্রেফতার করা হয়। জুলাই আগস্টে হলে অবস্থান করার প্রমাণ না থাকলেও তাকে গ্রেফতার করা হয় কোন মামলা ছাড়াই।
রাতুলের এক সহপাঠীর ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছে ” ছেলেটার অপরাধ জহু হল ছাত্রলীগের দুই নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক, ও শেষ দুই বছর ধরেই রাজনীতিই করেনা,রাজনীতি ছেড়েছে অনেকদিন…ফেসবুক ও চালাতো না।শেষ একবছর ধরে হলেই থাকেনা,হলে আসতো দুই মাসে একবার।ইভেন কোটা আন্দোলনের সময় হলেও ছিল না। ওরে ও ধরতে হবে? “
আরেক বন্ধুর স্ট্যাটাসে আক্ষেপ শোনা যায় “সব জানার পরেও একটা নিরপরাধ ছেলের এমন ক্ষতি যে বা যারা করলো এরা শুধুই নিজের রাজনৈতিক অদূরদর্শিতার প্রমান দিল, এর থেকে বেশিকিছু বলতে চাচ্ছিনা আর”
১৭. সারোয়ার হোসেন,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় অসুস্থ থাকলেও এ যাত্রায় রক্ষা পায়নি সারোয়ার, তাকে গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। যদিও সারোয়ারকে সমন্বয়কদের পক্ষ নিয়ে কথা বলতে দেখা যায় জুলাই আন্দোলনে, ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মী তাকে নিয়ে বলেন ” ভোল পাল্টে ও রক্ষা পায় নি সে”।
১৮. মমিন হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, এস এম হল ছাত্রলীগ
মমিন হোসেন সক্রিয় কোটা আন্দোলনকারী, ছাত্রলীগ পদবী থাকলেও তাঁর ফেসবুক পোষ্টে ৩ আগস্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তাকে শহীদ মিনারে দেখা যায়।
তাঁর বন্ধু আকিব আবসারের ফেসবুক পোষ্টে দেখা যায়
মমিনের বাসা জামালপুরে। তার মা খুবই অসুস্থ একজন মানুষ।নভেম্বরের ১২ তারিখে সে তার মাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এসেছিলো। ২৩ নভেম্বর তাকে ঢাকা মেডিকেলের নতুন বিল্ডিংয়ে সে তার মায়ের জন্য খাবার নিতে নীচের ক্যান্টিনে আসলে সেখান থেকে তার মায়ের বিভিন্ন রিপোর্টের একটি ফাইল সহ সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পরে আমরা শাহবাগ থানা, লালবাগ থানা এবং ডিবি কার্যালয় সব জায়গায় তার খোঁজ করেছিলাম। কেউই আমাদেরকে কোন ইনফরমেশন দেয় নি। পরে তাকে সিএমএম কোর্টে নিয়ে যাওয়া হলে আমরা জানতে পারি যে তাকে সমন্বয়ক মাহিন সরকারের করা ১৫ জুলাইয়ের একটি মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কোর্টে তোলার পরে তাকে ৫ দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়।
১৯।কাজল দাস,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক,বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
কাজল দাসের নামে কোন মামলা ছিলো না, কিন্তু তাকে রহস্যজনকভাবে গ্রেফতার করা হয়, তাঁর মামা সুশান্ত দাসের ফেসবুক পোষ্টের বরাত দিয়ে জানা যায়
আমার ভাগিনা বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জগন্নাথ হল ছাত্রলীগ এর সাবেক সভাপতি,সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার কৃতি সন্তান কাজল দাসকে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় ডিবি পরিচয়ে কে বা কারা তুলে নিয়ে গেছে। এখনো ডিবি জানায়নি যে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে!
এটা মানবিকতার চরম লঙ্ঘন,গ্রেফতার করা হলে সেটা জানানো হোক! সঠিক আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করার অনুরোধ জানাই।নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি!’
২০। ইয়াজ আল রিয়াদ, সাবেক সহ সভাপতি,বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
ইয়াজ আল রিয়াদ ছাত্রলীগের রাজনীতি ছেড়েছেন ২০২০-২১ সালে, জুলাই আন্দোলনের তাঁর কো্ন সম্পৃক্তার কথা না জানা গেলেও অস্পষ্ট কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ইয়াজ আল রিয়াদের এক শুভানুধ্যায়ি বলেন ” রিয়াদ পড়াশুনা নিয়ে থাকতো এবং নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকতো, ওকে শুধু শুধু গ্রেফতার করা হয়েছে।
ইয়াজের বন্ধু ডালটন ফেসবুক পোষ্ট দিয়ে এভাবে হতাশা প্রকাশ করেন
" আমার বন্ধু ইয়াজ আল রিয়াদ রাজনীতি ছেড়েছিল বেশ আগেই।আমার বন্ধুদের মধ্যে সবচেয়ে পড়ুয়া মানুষ সে।রাজনীতির মাঠ থেকে অনেকে আখের গুছিয়েছে,আমার বন্ধুদের ই অনেকে,ইয়াজ কিছুই করতে পারে নি সেভাবে।আর খুব যে আগ্রহ ছিল কিছু করার তাও না।বরং বই কেনার টাকা হয়ে গেলেই খুশি ছিল সে।২০১৪ এর দু:সময়ে ইয়াজ ছিল,বঙ্গবন্ধু হলের সেক্রেটারি সে তখন।তার পর সেন্ট্রালে ছিল,সর্বশেষ সহ সভাপতি।
ইয়াজের নিতান্ত শত্রুরাও বলতে পারবে রাজনৈতিক পরিচয়ে কোন সুবিধা পেয়েছে সে।প্রচন্ড অর্থনৈতিক দুরবস্থায় পরিবাগের একটা মেসে কোন ভাবে মাথা গুজত।খাওয়ার টাকা জোগাড় ও কঠিন ছিল কখনো।তাকে জিজ্ঞেস করলে বলত,ব্যবসা,চাকরি সে করবে না।পড়বে আর লিখবে।”
২১। বাবর, সহসভাপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগ
২২। সাবেক ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা, বর্তমানে যবিপ্রবির কর্মকর্তা সাইফুর রহমান
২৩। জাহিদুল ইসলাম জাহিদ,সভাপতি,শহিদুল্লাহ হল ছাত্রলীগে সভাপতি
ট্রু গেজেটের অনুসন্ধানে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন হল শাখা ছাত্রলীগের নিরাপরাধ নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে জুলাই আন্দোলনে তাদের কোন ভূমিকা না থাকলেও। বেশিরভাগ নেতাকর্মীকে জামিন দেওয়া হচ্ছেনা, মোটা অংকের মামলা বানিজ্যের কথা শোনা গেছে ভুক্তভোগিদের পরিবারের কাছে। যদিও সন্তান বা প্রিয়জনের নিরাপত্ত্বার শঙ্কায় কেউ এর বেশি বলতে রাজি হন না।
গ্রেফতারকৃতদের বন্ধু স্বজনদের আরেক ভাষ্য হলো ” যাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে তাদের নামে কোন মামলা নেই, ফুটেজ নেই,প্রমাণ নেই , অজ্ঞাতনামা মামলায় ঢোকানো হচ্ছে, ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী হলেও ছাড় পাচ্ছেনা,এমনকি জুলাই আন্দোলনে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে রাজপথে থাকলেও তারাই এখন সবচেয়ে বড় ভিক্টিম প্রতিহিংসার শিকার, আমরা এরকম সংস্কারের জন্য রক্ত দেইনি।
ট্রু গেজেটের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার, হামলা,মামলা থেকে রেহাই নেই,মিলছেনা ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ,নাম প্রকাশে এক অনিচ্ছুক ছাত্রলীগ কর্মী বলেন ” একজন কয়েদি পর্যন্ত ক্লাস- পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়,আমাদেরকে আমাদের সহপাঠীরা সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছে, আমাদের শিক্ষকরাও আমাদের কোন ধরণের সাহায্য করছেনা। কোন অপরাধ না করেও এভাবে ভিকটীম হতে হবে কল্পনার বাহিরে”
সর্বশেষ পরিস্থিতিঃ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্ট অনেক নেতাকর্মী শুধুমাত্র রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। যদিও তাদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট মামলা, অভিযোগ কিংবা তথ্যপ্রমাণ নেই। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার এই পরিবেশ শিক্ষাঙ্গনে মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশের পথে প্রন্তরে,রাজপথে ঘটে যাওয়া যেকোনো অন্যায় অসংগতি আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরি/ধরবো। দেশের মেইনস্ট্রিম মিডিয়া যা বলেনা আমরা তা বলি, প্রকাশ করি। আপনাদের কাছে থাকা আরো তথ্য আমাদেরকে দিয়ে সহায়তা করুন, আমরা সত্য প্রকাশে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
আমাদেরকে ইমেইল করুন info@truegazette.news
আরো পড়ুন
- ঢাবিতে ‘মা ও শিশু’ ভাস্কর্য ভাঙচুরের নেপথ্যে ছাত্রশিবির, নিরুপায় কর্তৃপক্ষ
- ইউনূসের নেতৃত্বে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মহাউৎসব
- দ্রব্যমূল্য নিয়ে ইউনূসের আয়নাবাজিঃ ফেসবুকে ভাইরাল দ্রব্যমূল্যের সাথে বাজারের মিল নেই
- শিল্প, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে মৌলবাদের কালো থাবা, কোন পথে যাচ্ছে বাংলাদেশ?
- ছিনতাইয়ের মহোৎসবের নেপথ্যে ‘১৩৮’ কিশোর গ্যাং, নেতৃত্বে নাগরিক কমিটির দুই নেতা!