বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের নেতৃত্বে বিএনপি জামাতের প্রত্যক্ষ মদদে ৪৬ জন পুলিশ সহ ৫০ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছে জুলাইয়ের আন্দোলনে।নিরাপত্তা বাহিনীদের সদস্যদের মেরে ফ্লাইওভার কিংবা ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখার মত ঘটনা ঘটিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এসব হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বিএনপি জামায়াতের কর্মীরা , ৬-৭ আগস্ট মিডিয়ায় পরিস্কারভাবে এসেছে এতগুলো নিরাপত্তা বাহিনীর হত্যাকান্ডে জড়িত ছিল আন্দোলনকারীরা। কিন্তু হায় সেলুকাস এসব হত্যাকাণ্ডে কয়েক হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে আসামী করে হামলা করেছে প্রধান উপদেষ্টা শাসিত সরকার।
নজিরবিহীন বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড হত্যাকান্ড ঘটেছে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর আজ পর্যন্ত একটি মামলা হয়নি মূল হত্যাকারীদের নামে, আওয়ামী লিগের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে বরং এই সরকার পুলিশ হত্যাকান্ডের বিচার করার স্বদিচ্ছা নিয়ে সন্দেহ আরো ঘনীভূত হচ্ছে। হত্যাকন্ডের এক মাস পেরিয়ে গেলেও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হত্যার দায়ে এখনো গ্রেপ্তার হয়নি।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যাকান্ড গুলোকে বাংলাদেশি মিডিয়াগুলো যেভাবে দেখিয়েছে ঠিক এই এই হত্যাকান্ডগুলোকেও দেখিয়েছে নিহত, মৃত্যু টার্ম ব্যবহার করে। প্রধান উপদেষ্টা শাসিত মিডিয়াগুলোতে যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোন সংবাদ প্রকাশ করা হয়নি এসব হত্যাকন্ডের। আইনের শাসনের কথা বলে,সংস্কারের কথা বলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের নেতৃত্বে বিএনপি জামাতের প্রত্যক্ষ মদদে যে নজিরবিহীন হত্যাকান্ড ঘটেছে প্রকৃত খুনিদের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত একটি মামলা হয়নি। বরং মামলা হয়েছে উল্টো নির্দোষ
হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রকৃত খুনিদের বাদ দিয়ে।
আওয়ামীগের হত্যাকাণ্ডের স্বীকার হওয়া ১৩২ জন নেতাকর্মী এবং তাদের স্বজনের হত্যার বিচার এর আশা খোদ আওয়ামী লীগের লোকজন প্রত্যাশা করেনা এই সরকারের কাছে,কিন্তু ৫০ জন পুলিশ,বিজিবি, র্যাব সদস্যদের হত্যার বিচার তাই বলে হবেনা?
পুলিশ সদর দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী নিহত পুলিশ সদস্যদের লিস্ট।


সংবাদপত্রে আসা লোমহর্ষক পুলিশ হত্যাকন্ডের কথা না হয় পাঠকরা মনে রাখুন… বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বিএনপি জামায়াতের কর্মীদের হামলায় যেভাবে ৫০ জন নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য শহীদ হয়। স্বচ্ছতার স্বার্থে আমরা প্রত্যেক হত্যাকাণ্ডের খবরের হাইপারলিংক করেছি,যাতে কোন প্রশ্নের সুযোগ না থাকে।
সিরাজগঞ্জে ১৫ পুলিশ হত্যা
রবিবার এনায়েতপুর থানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আহত পুলিশের একজন এসআই ও একজন কনস্টেবলের গতকাল সকালে রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এ ঘটনায় ১৬ পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হলো। সিরাজগঞ্জের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থানার পরিদর্শক শাহিনুল আলম বলেন, ওইদিন সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় তিন দফায় হামলা চলানো হয়। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে চেয়েছিলেন কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় যে যার মতো দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন কর্তব্যরত প্রায় ৪০ জন পুলিশ সদস্য। তাদের কেউ থানার ছাদে, কেউ পাশের বাড়িতে, কেউ শৌচাগারে, কেউবা জঙ্গলে আশ্রয় নেন। কিন্তু সেখান থেকেই খুঁজে এনে একে একে ১৪ জনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে হামলাকারীরা। সুত্রঃ কালের কণ্ঠ ও বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঢাকায় দুই বিজিবি সদস্য ও দুই পুলিশ হত্যা
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও। সোমবার যাত্রাবাড়ী থানায় হামলার শিকার হয়ে নিহত হন র্যাব-৬-এ কর্মরত বিজিবির ডিএডি মো. আনোয়ার হোসেন। গতকাল দুপুরে ছেলে রাসেল ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক আনোয়ার হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। উত্তরা পূর্ব থানায় সোমবার হামলার শিকার হয়ে নিহত হন ডিএমপির ডিবি উত্তর জোনের পরিদর্শক রাশেদুল ইসলাম (৪৪)। গতকাল সকালে ভাগ্নে আলমাস আলী উৎস উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। একই দিন গাজীপুরের শ্রীপুরে হামলার শিকার হয়ে নিহত হন বিজিবি সদস্য আব্দুল আলিম শেখ (৪৪) এবং সংসদ ভবন এলাকায় হামলার শিকার হয়ে নিহত হন পুলিশের কনস্টেবল মো. মাহফুজুর রহমান (২৮)। সুত্রঃ দেশ রুপান্তর
আশুলিয়ায় তিন পুলিশ হত্যা
গতকাল সকালে আশুলিয়ার বাইপাইলের কাছে ফুট ওভারব্রিজে দুজনের লাশ ব্রিজের রেলিংয়ের সঙ্গে উল্টো করে ঝোলানো দেখতে পাওয়া যায়। মরদেহ দুটি আশুলিয়া থানা পুলিশের দুই সদস্যের বলে জানা গেছে। নিহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- ঢাকা জেলা ডিএসবি আশুলিয়া জোনের কর্মরত এএসআই সোহেল রানা ও এএসআই রাজু আহমেদ। এ ছাড়া রাজধানীর মালিবাগে স্পেশাল ব্রাঞ্চের এএসআই রফিকুল ইসলাম।সুত্রঃ দেশ রুপান্তর ও ঢাকা পোষ্ট

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানায় হামলা, ৪ পুলিশসহ নিহত ৭
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানায় হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৪ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৬ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহত পুলিশ সদস্যরা হলেন এএসআই মো. নাছির, এসআই মো. বাছির, কনস্টেবল মোশারফ ও গিয়াস।এর মধ্যে ৩ জন পুলিশকে জবাই করে হত্যা হয়েছে। ১২ জন পুলিশ সদস্য এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। সুত্রঃ দেশ রুপান্তর ,আই টিভি, বিডিনিউজ ২৪।
কুমিল্লায় তিন পুলিশ সদস্য হত্যা
এ জেলার দাউদকান্দি ও তিতাস থানায় হামলার ঘটনায় ৩ পুলিশ সদস্যসহ ৪ জন নিহত হয়েছেন। , স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা তিতাস থানা ঘেরাও করতে গেলে থানা পুলিশ আত্মরক্ষার্থে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এতে কমপক্ষে ৩০ জন গুলিবিদ্ধ হন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা থানায় পৌঁছে পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করেন। থানা পুলিশ সদস্যদের উদ্ধারের পর উৎসুক জনতা তিতাস থানা এবং থানার পাশের মার্কেটে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় থানা পাহারায় থাকা ২ পুলিশ সদস্য জীবন রক্ষার্থে থানার পেছনের ফটক খুলে পালানোর চেষ্টা করেন। জনতা তাদের দেখে গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের দুজনেই মারা যান। সুত্রঃ দেশ রুপান্তর ও আইটিভি
দুই পুলিশ হত্যা
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে থানার এসআই সন্তোষ চৌধুরীকে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখে উত্তেজিত জনতা।, সোমবার সকালে মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। মিছিলটি বানিয়াচং থানার কাছে পৌঁছলে পুলিশ মিছিলকারীদের উপর গুলি চালায়। আন্দোলনকারীরা পুলিশকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষ শুরু হয়।

এতে ঘটনাস্থলে শিশুসহ তিনজন নিহত হয়। আহত হন শতাধিক। এ অবস্থায় উত্তেজিত জনতা দফায় দফায় হামলা চালিয়ে থানা ঘেরাও করে আগুন লাগিয়ে দেন। আটকা পড়ে প্রায় ৩৫/৩৬ জন পুলিশ। গভীর রাতে হবিগঞ্জ থেকে সেনাবাহিনী গিয়ে পুলিশকে উদ্ধার করে। এরিমধ্যে এসআই সন্তোষকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত তার লাশ রাস্তায় পড়ে থাকে। পরে সেখান থেকে তুলে নিয়ে গাছে ঝুলিয়ে রাখে। নিহত সন্তোষের বাড়ি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায়। এদিকে কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ মহাসড়ক ফাঁড়ির মো. এরশাদ আলী নামের একজন কনস্টেবলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সুত্রঃ টিবি এস ও আমাদের সময়, দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার অভুত্থানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে মোট ৪৪ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।আজ রোববার নিহত পুলিশ সদস্যদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে পুলিশ সদরদপ্তর। সুত্রঃ ডেইলি স্টার। ডি এম পির প্রেস রিলিজে বলা জানানো হয়, নিহত ৪৪ জনের মধ্যে কনস্টেবল ২১ জন, এএসআই সাত জন, এটিএসআই একজন, এসআই ১১ জন, নায়েক একজন, এবং তিন জন পরিদর্শক রয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচ আগস্ট নিহত হয়েছেন ২৪ জন পুলিশ। আর চার আগস্ট ১৪ জন নিহত এবং বাকি সদস্যরা বিভিন্ন সময় নিহত হন।নিহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ডিএমপির ১৪ জন, সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার ১৫ জন, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানার দুই জন, কুমিল্লার তিতাস থানার দুই জন, চাঁদপুরের কচুয়া থানার একজন, হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানার একজন, ঢাকা এসবির একজন, নারায়ণগঞ্জ পিবিআইয়ের একজন, ট্যুরিস্ট পুলিশ সদর দপ্তরের একজন, কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশের একজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানার একজন, খুলনা মহানগর পুলিশের একজন, গাজীপুর মহানগর পুলিশের একজন এবং ঢাকা জেলার দুই জন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। সুত্রঃ একাত্তর।

পুলিশের রিপোর্টে যদিও এসেছে ৪৪ জন, কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে এসেছে নোয়াখালীতে চার জন নিহত যেখানে পুলিশ দুজন উল্লেখ করেছে। মোট ৪৬ জন পুলিশ সদস্য,দুজন বিজিবি,একজন র্যাব এবং আনসার সহ সর্বমোট ৫০ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য হত্যার স্বীকার হয়েছেন জড়িত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বিএনপি জামায়াতের কর্মীদের দ্বারা।
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীদের হামলায় ততকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের ১৩৫ জন কর্মী এবং নিরাপত্তাবাহিনীর ৫০ জন সহ ১৮৫ জন জন নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে।
বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ঘটে যাওয়া যেকোনো অন্যায়,হামলা,হত্যাকান্ড,অসংগতি আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। আমাদের এই তালিকা সত্যিকারে যা হয়েছে তার তুলনায় নগণ্য , আপনাদের কাছে থাকা আরো তথ্য আমাদেরকে দিয়ে সহায়তা করুন, আমরা সকল সত্য তুলে ধরবো আপনাদের পক্ষ থেকে আমাদেরকে ইমেইল করুন info@truegazette.news।